1 min read

ট্রান্সজেন্ডার সম্পর্কে ইসলাম যা বলে।

আমি কিন্তু কখনোই নিজেকে মনে মনে মেয়ে মনে করি না,
বরঞ্চ বাবুর আম্মুকে জিজ্ঞেস করি আচ্ছা তুমি যে মেয়ে এর জন্য কি তোমার আফসোস হয়….? আচ্ছা তোমার কি এমন মনে হয় না যে ইশ্ যদি ছেলে হতাম কতোই না ভালো হতো?
জবাব আসে আল্হামদুলিল্লাহ আমি খুশি।

মহান রব পবিত্র কুরআনে বলেছেন,
‘আমি মানুষকে সর্বোত্তম সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি। (সূরা : ত্বীন, আয়াত : ৪)
তারপরও আমরা নিজেদের কাস্টমাইজ করতে চাই। আমরা অনেকেই নিজেদের আরো বেশি সুন্দর করার জন্য এতোটাই মরিয়া হই যেন মহান রব আমাদের ভালোবেসে সৃষ্টি করেন নাই।
আমার পরিচিত একজন আপু আছেন তিনি ওয়েস্টার্ন কান্ট্রিতে থাকেন এবং যথেষ্ট পরহেজগার, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে উনার কণ্যা সার্জারি করে নিজেকে ছেলেতে রুপান্তরিত করতে চায়, ব্রেস্ট সার্জারি করে অপসারণ করতে চায়, ছেলেদের মতো হেয়ার কাট দেয় এবং চালচলন ছেলেদের মতোই করে। এই বিষয়ে আপুটা অত্যন্ত মর্মাহত এবং ব্যথিত। তিনি Whatsapp এ মনের দুঃখ শেয়ার করেন আমার সাথে যদিও এই রকম বিষয়ে আমি কোন কাজ করি না, আমি উনাকে সান্ত্বনা দেই যে আপু বেশি বেশি তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে মহান রবের কাছে আপনার দুঃখগুলো পেশ করুন! মায়ের দোয়া আল্লাহ দ্রুত কবুল করেন। আল্লাহ পাক আপনার দোয়া কবুল করলে তার মন ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

ট্রান্সজেন্ডারঃ
ট্রান্স বলতে আমরা সোজাসাপ্টা যেটা বুঝি সেটা হলো স্থানান্তর, বদল কিংবা পরিবর্তন।
জেন্ডার মানে লিঙ্গ, অর্থাৎ লিঙ্গ পরিবর্তন।
আচ্ছা বলুন তো একটা মেয়ে যদি সার্জারি করে ছেলের মতো হয়, ধরুন বেশভূষা ছেলের মতোই হলো, সে কি প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করতে পারবে? কিংবা একটা ছেলে যদি মেয়ের মতো বেশভূষা ধরে সে কি গর্ভধারণ করতে পারবে?
বিষয়টা এরকম যে কোন কুকুর ছানার গায়ে (লোমে ) যদি বাঘের মতো কালার করা হয় তারপরও যেমন তার কালার ছাড়া আর কোন পরিবর্তন হবে না, অর্থ্যাৎ কুকুর ছানা চীরদিনই কুকুর ছানাই থাকবে, তাকে কেউ কখনোই ব্যাঘ্র শাবক বলবে না। তদ্রুপ একজন ছেলে যদি সার্জারি করে মেয়ের অথবা একজন মেয়ে যদি ছেলের বেশভূষা ধরে এতে সেই কুকুর ছানার মতো কালার ছাড়া আর কিছুই হবে না।
আপনি যদি মনে করেন স্রষ্টা আমাদের প্ল্যান পরিকল্পনা করে তৈরী করেননি তাহলে আপনি বোকার রাজ্যে আছেন।
আমরা সকলে জানি কোটি কোটি ভাই-বোনকে পিছনে ফেলে মহান রব মাতৃগর্ভের ওভামে আমাদের জায়গা করে দিয়েছেন এবং ফার্টিলাইজ করে দুনিয়াতে আসার সুযোগ দিয়েছেন বিধায় আমরা এতো ফ্যাশান করতেছি, যেদিন আমাদের জননী গর্ভসঞ্চার করেছেন সেদিন তো আমি না হয়ে অন্য কোন শুক্রানু ফার্টিলাইজ হতে পারতো, কিন্তু না! মহান রব আপনাকে ও আমাকে চয়েজ করেছেন।
তাই তো আজ আমরা এই ধরণীতে।
আর আজ আপনি আমি স্রষ্টার সৃষ্টিতে অসন্তুষ্ট! কতোটা উন্মাদ হলে মানুষ এমন করতে পারে!

আরো কয়েকটি বিষয় আছে যেটা ট্রান্সজেন্ডারে মতোই ভয়াবহ কিন্তু আমরা সেগুলো ততোটা গুরুত্ব দেই না, যেমন ভ্রু প্লাগ! সেটাও কিন্তু মারাত্নক রকমের গুনাহের কাজ যেটা অনেক মুসলিম মা বোনেরা জানেন না। কেউ কেউ সৌন্দর্যবৃদ্ধি ও নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য প্লাস্টিক সার্জারি করে। যেমন- নাক, চিবুক, ঠোঁট, চোখের পাতা, কান, স্তন প্রভৃতি অঙ্গের সার্জারি করে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলে অথচ ইসলামে এগুলোকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি মানুষকে উত্তম অবয়ব দিয়ে সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা ত্বিন : ৪)।
এরপরও নিজেকে অনাকর্ষণীয় মনে করা এবং আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন সাধিত করা হারাম এবং শয়তানের কর্ম।
পবিত্র কুরআন শরীফে এসেছে;
” শয়তান বলল- আমি অবশ্যই তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট অংশ গ্রহণ করব। তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, তাদেরকে আশ্বাস দেব; তাদেরকে পশুদের কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়।’
(সূরা নিসা : ১১৮-১১৯)

হাদিসে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্‌র অভিশাপ বর্ষিত হোক সে সব নারীদের উপর যারা শরীরে উল্‌কি অঙ্কণ করে এবং যারা অঙ্কণ করায়, (এখানে নারী পুরুষ উভয়ের জন্য ট্যাটু করার কথা বলা হয়েছে) আর সে সব নারীদের উপর যারা চুল, ভ্রু তুলে ফেলে এবং সে সব নারীদের উপর যারা সৌন্দর্যের জন্যে সম্মুখের দাঁত কেটে সরু করে, দাঁতের মধ্যে ফাঁক তৈরি করে, যা আল্লাহ্‌র সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন আনে। রাবী বলেনঃ আমি কেন তার উপর অভিশাপ করব না, যাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অভিশাপ করেছেন?
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৯৩১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।

আর আল্লাহ্‌র কিতাবে আছেঃ
রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর।
– সুরা আল-হাশর ৫৯:৭
————
বিঃদ্র- পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন!
চাইলে কপি পেস্ট করতে পারেন তবে অবশ্যই কার্টেসী দিবেন।
এই পোষ্টটি কাউকে কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়।
———

Md. Sarwar Hossen

মোঃ সারোয়ার হোসেন।
Mdsarwarhossen@muminmusolman.com
http://www.facebook.com/muminmusolman01

2 thoughts on “ট্রান্সজেন্ডার সম্পর্কে ইসলাম যা বলে।

  1. আমার ছোট বোন খুব অসুস্থ আপনাদের সাথে যোগাযোগ কিভাবে করব

    1. আসসালামুয়ালাইকুম হুজুর আমার বোন অনেক অসুস্থ আপনার সাথে কিভাবে যোগাযোগ করবো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *